বাঙালি সংস্কৃতির নামে হিন্দু ধর্মের বিভিন্ন ধর্মীয় আচারকে গ্রহণযোগ্য করে তোলার একটা প্রবণতা কারো কারো মধ্যে লক্ষ্যণীয়। নাচ ও টিপ— এমনই দুটো আচার, যা সরাসরি দেবদেবীদের উপাসনা হিসেবে করা হত।
‘টিপ’-কে হিন্দিতে বলা হয় ‘বিন্দি’, যা সংস্কৃত শব্দ ‘বিন্দু’ থেকে এসেছে। যা মূলত প্রাচীন হিন্দু প্রথা হলেও আজ ফ্যাশন হিসেবে এর ব্যবহার ব্যাপক। ঋগ্বেদ থেকে ৫০০০ বছর আগে এই প্রথার অস্তিত্ব জানা যায়। অনেকে ‘লাল রঙের টিপ’-কে সম্পৃক্ত করেন পশুবলি অনুষ্ঠানের সাথে। তান্ত্রিক গূঢ়ার্থ মতে, ৬টি মৌলিক পয়েন্টের (ষড়চক্র) একটি হল দুই ভ্রুর মাঝখানটা, যার নাম ‘আজ্ঞা’। এখানে লাল ‘বিন্দি’ দেহের শক্তি ও মনোযোগ ধরে রাখে বলে তান্ত্রিক শাস্ত্র মনে করে।
প্রাচীন আর্য সমাজে বর কনের কপালে একটা লম্বা ‘তিলক’ দিত, যার অপভ্রংশ হল বর্তমান টিপ। বিবাহিতা নারীর ‘শনাক্ত চিহ্ন’ হলেও আজ অবিবাহিতরাও এটা ব্যবহার করে থাকে। প্রখ্যাত সব অভিধানও ‘bindi’-র অর্থকে বিবাহিতা হিন্দু নারীদের সাথে সম্পৃক্ত করেছেন। (One of the most recognizable items in Hinduism is the bindi, a dot worn on women's foreheads.)
অর্থাৎ টিপ হিন্দুধর্মের শিআর। যেমন টিকি, পৈতা, সিঁদুর। যা দেখে হিন্দু বলে চেনা যায়। অনেকে শাড়ির সাথে তুলনা দিয়ে স্বাভাবিকীকরণের চেষ্টা করছেন। শাড়ি হিন্দু 'ধর্ম'-এর সাথে সম্পর্কিত না। কিন্তু টিপ সরাসরি 'ধর্ম' সম্পর্কিত চিহ্ন। সুতরাং ‘টিপ পরা’ অবশ্যই কাফিরদের সাদৃশ্য ধারণের মধ্যে পড়ে, যা পোশাকের ক্ষেত্রে ইসলামের নীতির লঙ্ঘন। মুসলিম নারীদের অবশ্যই এই সাজ পরিহার করা ঈমানের দাবি।
সূত্রঃ
Bindi: Investigating the True Meaning Behind the Hindu Forehead Dot, Ancient Origins (3 MAY, 2019)