যাকাত বিষয়ক একটা লেখা পড়তে পড়তে একটা কথা মাথায় আসলো। লার্জ স্কেলে যাকাতের সুফল পেতে হলে যাকাত সংগ্রহ ও বণ্টন 'প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে' হতেই হবে। এর বিকল্প নেই। প্রাতিষ্ঠানিক বলতে রাষ্ট্রীয় যাকাত ফান্ড টাইপ অজানা কিছু নয়, যেখানে আপনি আসলে জানেন না আপনার যাকাত সঠিক পাত্রে গেল কি না।

ব্যাপারটা নববী যুগ থেকেই প্রাতিষ্ঠানিক ও দায়িত্বশীল একটা ব্যবস্থা ছিল, যা আজ আর নেই। কালের কণ্ঠের এক রিপোর্টে এসেছিল, বাংলাদেশের ২৫% মানুষ যাকাতের নেসাব পুরা করেছে। বছরে ৩০ হাজার কোটি টাকা যাকাত সংগ্রহ করা সম্ভব।

আমার সামনে এখন এরকম একটা চিত্র ভাসছে...

  • সালাতের মতো করে যাকাতের বয়ান হোক লাগাতার কয়েক জুমআয়, ওয়াজ-মাহফিলে।
  • রাষ্ট্র ছাড়া আমাদের আরও প্রতিষ্ঠান আছে। গ্রাম ভিত্তিক, মসজিদ-মহল্লা/পাড়া ভিত্তিক সংগঠন হতে পারে, যার কেন্দ্রে থাকবেন একজন আলিম। অনেকটা হজ-কাফেলায় যেমন একজন মুয়াল্লিম থাকেন। মসজিদে যেমন ইমাম থাকেন, অমন। যিনি আগ্রহীদের যাকাত ক্যালকুলেশনে সাহায্য করবেন এবং যাকাতের ভিতর থেকেই এককালীন একটা হাদিয়া পাবেন।
  • যাকাতের ফজিলত, বাধ্যবাধকতা সকলকে জানানোর পর আগ্রহীদের যাকাত একত্র করে ঐ গ্রাম/মহল্লারই গরীবদের দেয়া হবে। অল্প লোককে, তবে ভালো এমাউন্ট। ১০ বা ২০ হাজার। বা ভ্যান, সেলাই মেশিন বা ক্ষুদ্র বিনিয়োগ করতে পারে এমন পরিমাণ। এগুলোর ডকুমেন্ট রাখা হবে। নিয়মিত তারগীব দেয়া হবে। এভাবে রাষ্ট্রীয় যাকাত ব্যবস্থার একটা মিনিয়েচার কায়েম হবে। এনজিওর জুলুম থেকে নিজ গ্রামবাসীদের বাঁচানো যাবে।
  • যারা যাকাত দেবে না, তাদের কাছে গাশত করা হবে দাওয়াহ করা হবে , যেমন নামাযে আনার জন্য গাশত করা হয়।
  • পাড়ায়-গ্রামে উদ্যমী যুবক-তরুণ-মধ্যবয়স্ক মিলে এমন উদ্যোগ হতে পারে। চাইলে যারা সরাসরি যাকাতের পিছনে কাজ করবে, আলিমদের কাছে শুনে তারা এককালীন একটা হাদিয়াও হয়ত যাকাত থেকেই পেতে পারবে।
  • নিজ গ্রামে যাকাত নেবার লোক না থাকলে পাশের গ্রামের গরীব লোকদের লিস্ট করা হবে। এভাবে চলবে।

বাধা আসে না, এমন কিছু আছে নাকি। বাধা তো সবকিছুতেই আসে। তবুও তো ইতিহাস বদলে যায়। যায় কি না?

কেউ কেউ এটাকে মিশন হিসেবে নিতে পারেন।